durga sagar
দূর্গাসাগর বাংলাদেশের বরিশাল জেলার একটি ঐতিহাসিক জলাশয় এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র। এটি বরিশাল সদর উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নে অবস্থিত। ১৭৮০ সালে বরিশালের তৎকালীন রাজা শিব নারায়ণ তার মা দুর্গা দেবীর স্মরণে এই জলাশয়টি খনন করেন। মূলত মাটির কাজের জন্য খনন করা হলেও এটি পরে এলাকাবাসীর জন্য পানির প্রধান উৎস হয়ে ওঠে।দূর্গাসাগর খননের মূল উদ্দেশ্য ছিল এলাকার কৃষকদের সেচের জন্য পানির ব্যবস্থা করা। এক সময় দূর্গাসাগর অঞ্চলটি ঘন বনাচ্ছন্ন ছিল এবং এখান থেকে মাটি কেটে তৈরি করা হয়েছিল বৃহৎ পুকুরটি।পুকুরটির চারপাশে মাটি তুলে তীর তৈরি করা হয়, এবং এটি মূলত বরিশালের ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে পরিচিত।সময় পেলে ঘুরে আসুন দুর্গাসাগর দীঘি।
বরিশালের দূর্গা সাগর তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহ্যবাহী পরিবেশের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। ১৭৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই দীঘি বরিশালের অন্যতম পুরাতন জলাশয় এবং একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। প্রায় ২৪ একর বিস্তৃত এই দীঘি এবং এর চারপাশে থাকা গাছপালা শীতকালে পরিযায়ী পাখিদের আকর্ষণ করে, যা একটি মনোরম পরিবেশ তৈরি করে।পরিযায়ী পাখিদের কলরব, সবুজ প্রকৃতি, এবং পানির ছলাৎছলাৎ শব্দ দূর্গা সাগরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। দীঘির চারপাশে হাঁটার জন্য রয়েছে ইট বাঁধানো রাস্তা এবং বসার বেঞ্চ, যা দর্শনার্থীদের প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগের সুযোগ দেয়। পাশাপাশি, বর্ষার মৌসুমে দীঘিটি আরো মনোমুগ্ধকর হয়ে ওঠে।এটি বরিশালের দর্শনার্থীদের জন্য একটি প্রিয় গন্তব্য যেখানে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায় ।
দূর্গা সাগরে প্রচুর মাছ চাষ করা হয় এবং এটি স্থানীয় মৎস্যজীবীদের জন্য আয়ের একটি বড় উৎস। এছাড়াও, শীতকালে এখানে অনেক পরিযায়ী পাখি আশ্রয় নেয়, যা পাখি প্রেমীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়।
দূর্গা সাগরের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একে পর্যটকদের কাছে একটি জনপ্রিয় গন্তব্যস্থলে পরিণত করেছে। এটি স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য একটি মনোরম বিনোদন কেন্দ্র এবং ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটকরা এখানে এসে নৌকা ভ্রমণ, মাছ ধরা, এবং প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।
ঢাকা থেকে দূর্গা সাগর , বরিশালে যাতায়াতের জন্য কয়েকটি প্রধান পথ রয়েছে। আপনি বাস, লঞ্চ বা বিমান ব্যবহার করে যাতায়াত করতে পারেন।
১। ঢাকা থেকে সরাসরি বরিশাল পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বাস সার্ভিস রয়েছে। আপনি গাবতলী, সায়েদাবাদ বা মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে বাস ধরতে পারেন। নন এসি এবং এসি বাস সার্ভিস রয়েছে সবসময়।সাধারণত ৫-৬ ঘণ্টা সময় লাগে সাকুরা, বিআরটিসি,হানিফ,এনা,গ্রীন লাইন, ইত্যাদি।
২। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন লঞ্চ বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। জনপ্রিয় লঞ্চ সার্ভিসগুলির মধ্যে রয়েছে সুন্দরবন, পারাবত, এম ভি প্রিন্স আওলাদ,এডভেঞ্চার ,মানামি,সুরভী ইত্যাদি।
৩।ঢাকা থেকে বরিশাল বিমানবন্দরে সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে। ফ্লাইটের সময় প্রায় ৪৫-৬০ মিনিট। আথবা ব্যক্তিগত গাড়ি বা ভাড়া করা মাইক্রোবাসে করেও বরিশাল থেকে সরাসরি দূর্গা সাগরে যাওয়া যায়। এটি সবচেয়ে সুবিধাজনক এবং আরামদায়ক উপায়।
বরিশাল নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে দুর্গা সাগরে যাবার জন্য বাস , সিএনজি, মাহেন্দ্র, অটোরিকশা পাওয়া যায়। স্থানীয় রিকশা বা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে দূর্গা সাগরে যাওয়া যায়।
দূর্গা সাগর একটি ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থান হিসেবে স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়। এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করে।
দূর্গা সাগর বরিশাল সদর থেকে খুব কাছে, বরিশাল সদরে থাকার জন্য অনেক আবাসিক হোটেল রয়েছে। আপনি আপনার বাজেট অনুসারে যেকোনো আবাসিক হোটেলে থাকতে পারেন।
১।Hotel Grand Park-বেলস পার্ক লেকের পাশে অবস্থিত, এটি আন্তর্জাতিক মানের সুবিধাসম্পন্ন হোটেল। এখানে পার্ক ভিউ সহ বিভিন্ন ধরনের রুম ও সুইট রয়েছে।
২।Hotel Sedona-সদর রোডে অবস্থিত এই হোটেলটি চাইনিজ এবং বাংলাদেশি খাবারের পাশাপাশি ২৩২০ বর্গফুটের কনফারেন্স রুমের সুবিধা দেয়।
৩।Rich Mart Rest House-লঞ্চ ঘাটের কাছে অবস্থিত এই রেস্ট হাউসে আধুনিক সুবিধাসহ সিঙ্গেল থেকে ফ্যামিলি স্যুট পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের রুম পাওয়া যায়।
৪।Hotel Arena-সদর রোডে অবস্থিত হোটেল এ রান্নাঘরের সুবিধাসহ আধুনিক সজ্জা ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুম রয়েছে, যা আরামদায়ক পরিবেশে থাকার জন্য উপযোগী।
৫।Hotel Athena Internationa-কাটপট্টি রোডে অবস্থিত এই হোটেলে ফ্রি সকালের নাস্তা, ওয়াই-ফাই, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধা প্রদান করে।
৬।Hotel Charu Residential-বান্দ রোডে অবস্থিত এই হোটেলটি কক্ষের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ এবং বিনামূল্যে সকালের নাস্তার সুবিধা প্রদান করে।
আরও তথ্যের জন্য প্রতিটি হোটেলের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন বা তাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন
১।জাফরান রেস্টুরেন্ট – বারিশালের অন্যতম জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট, যা চাইনিজ এবং ইন্ডিয়ান খাবারের জন্য প্রসিদ্ধ।
২।তাওয়া রেস্টুরেন্ট – স্থানীয় খাবার যেমন মাছ, ভর্তা, ও ভাতের জন্য বিখ্যাত।
৩।হান্ডি করাই – মাটন ডিশের জন্য বিশেষভাবে সুপরিচিত।
৪।ধানসিড়ি রেস্টুরা – স্থানীয় খাবারের একটি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট।
বরিশাল সদরে ভালমানের রসগোল্লা পাওয়া যায়।আবশ্যই নিতাই ও হকের রসগোল্লা খাবেন।
বরিশাল দূর্গা সাগর ঘুরতে আসলে, গুটিয়া মসজিদ।Guthia Mosque।বায়তুল আমান জামে মসজিদ একবারের জন্য হলেও ঘুরে যাবেন।
shonar chor সৌন্দর্যের লীলাভূমি সোনার চর আপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী সোনার চর ।একটি…
fatrar char ফাতরার চর বাংলাদেশের কুয়াকাটা সৈকতের নিকটবর্তী এলাকার অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান ,ফাতরার চর(Fatrar Char)।এটি…
lebur-chor লেবুর চর,কুয়াকাটা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটি সুন্দর প্রাকৃতিক স্থান যা বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটা…
আলীপুর মাছ বাজার alipur fish market বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত কুয়াকাটা এলাকার একটি জনপ্রিয় ও বৃহৎ…
সাগর কন্যা কুয়াকাটা sagor konna kuakata অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাগর কন্যা কুয়াকাটা (Kuakata Sea…
বরিশাল জেলার শীর্ষ দর্শনীয় স্থানসমূহ top attractions in barisal district বরিশাল বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক এবং…
View Comments