kalaskathi jomindar bari
কলসকাঠী একটি প্রাচীন জনপদএবং তের জমিদারের বসবাস। কলশকাঠী জমিদার বাড়ি(kalaskathi jomindar bari) বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত একটি পুরনো ও ঐতিহাসিক জমিদারবাড়ি। এটি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে নির্মিত হয়েছিল এবং স্থানীয় জমিদারদের ঐশ্বর্য ও প্রভাবের প্রতীক হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। জমিদারবাড়িটি বাংলার জমিদার প্রথার এক সমৃদ্ধ নিদর্শন, যেখানে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো। তবে ভেঙে ফেলা হচ্ছে তিনশ বছরের পুরনো কলসকাঠির জামিদার বাড়ি।
১৭০০ সালের গোড়ার দিকে জমিদার জানকি বল্লভ রায় চৌধুরী কলসকাঠী স্থাপন করেন। আগে এর নাম ছিল কলুসকাঠী; কলুসকাঠী অপভ্রষ্ট কলসকাঠী।জানকী বল্লভ রায় চৌধুরী ছিলেন গারুড়িয়ার জমিদার রামাকান্তের পুত্র। জানকী বল্লভ রায় চৌধুরীরা ছিলেন দুই ভাই। বড় ভাই রাম বল্লভ। জানকী বল্লভকে হত্যার চক্রান্ত করে রাম বল্লভ। জানকী বল্লভ তার বৌদির মাধ্যমে হত্যার বিষয়টি জানতে পেরে রাতের আধারে গারুড়িয়া ত্যাগ করে মুর্শিদাবাদ চলে যান। সেখানে তিনি নবাবের কাছে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন এবং নবাব তাকে অরংপুর পরগনার জমিদার হিসেবে নিয়োগ করেন। যতদূর পর্যন্ত ভাটা তত দূর পর্যন্ত জানকী বল্লভের পাট্টা ছিল। জমিদারী পেয়ে তিনি কলসকাঠীতে এসে বসতি স্থাপন করে। কলসকাঠীর তের জমিদার মূলত জানকী বল্লভের পরবর্তী বংশধর।
কলসকাঠীকে একটি পৃথক জমিদার বাড়ি না বলে বলা যায় একটি প্রাচীন শহর। অনেকটা সোনারগাঁওয়ের পানাম নগরের আদলে তৈরি প্রতিটি স্থাপনা ও প্রাচীরের নকশা। এই জমিদার বাড়িটি তৈরিতে ইট, সুরকির পাশাপাশি পোড়া মাটির কারুকার্য করা হয়েছে। যা সেই তৎকালীন সময়ের আভিজাত্য প্রকাশ করে। জমিদারবাড়ির পাশেই অবস্থিত শিব মন্দির। প্রায় শত বছরের পুরনো এই মন্দিরটি কষ্টি পাথরের মূর্তি ও অন্যান্য ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণ।
এই মন্দিরে এখনো শত বছরের পুরনো মূল্যবান কোষ্ঠীপাথরের মূর্তি আছে। চুরির ভয়ে মন্দিরের ভেতরে দেবীর মূর্তিকে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। মন্দিরের সামনে ছোট একটি বেদী রয়েছে। যেখানে পূজার সময় প্রাণী বলি দেয়া হয়। প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে এখানে উদযাপিত হয় ঐতিহাসিক জগদ্ধাত্রী পূজা।
কলসকাঠীর জমিদারদের মধ্যে সর্বশেষ জমিদার ছিলেন রাজেস্বর রায় চৌধুরী। যিনি ৪৭’এর দেশভাগের পর সবাইকে নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। এরপর সেখানেই বসতি স্থাপন করেন। জমিদার বাড়ির সঙ্গেই ১৮৮২ সালে তৎকালীন জমিদার বরদাকান্ত রায় চৌধুরী নিজের ও তার স্ত্রী মুক্তা কেশীর নামে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয় কে.বি.এম একাডেমী (কলসকাঠী বরদাকান্ত-মুক্তাকেশী একাডেমী) প্রতিষ্ঠা করেন।
ঢাকা থেকে বরিশাল আসার জন্য বিভিন্ন পরিবহন মাধ্যম রয়েছে, যা যাত্রীদের জন্য সময় ও বাজেট অনুযায়ী সুবিধাজনক হতে পারে। এখানে কিছু জনপ্রিয় মাধ্যমের তথ্য দেওয়া হলো:
১।লঞ্চ (নৌপথ) ঢাকা থেকে বরিশাল আসার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আরামদায়ক মাধ্যম হলো লঞ্চ।ঢাকা থেকে বরিশালের জন্য অনেক বড় লঞ্চ চালু রয়েছে, যেমন পারাবত, সুরভী, এমভি প্রিন্স আওলাদ ইত্যাদি।সময়: প্রায় ৮-১০ ঘণ্টা।
২। বিমান (বিমানপথ)যদি আপনি দ্রুত বরিশালে পৌঁছাতে চান, তবে বিমান একটি আদর্শ মাধ্যম।ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউএস বাংলা, নভোএয়ার, বা বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটগুলো বরিশালে যায়।সময়: প্রায় ৩০-৪০ মিনিট।
কলশকাঠী স্থানীয় আনেক ভালমানের খাবার হোটেল আছে।সেসব দোকানে সকালের নাস্তা আথবা দুপুরের খাবার(যেখানে ভাত, খাসির মাংস, দেশি মুরগি, পাটশাক, ইলিশ মাছের ঝোল ইত্যাদি) খেতে পারেন।কলশকাঠী ভালমানের রসগোল্লা পাওয়া যায়।
কলশকাঠী থাকার জন্য নিম্ন মানের বেশ কিছু হোটেলে আছে।আপনি চাইলে এসব হোটেলে খুব কম খরচে থাকতে পারেন।এছাড়া ভালমানের হোটেলে থাকতে চাইলে বরিশাল সদরে আসতে হবে।বরিশাল সদরে অনেক ভালমানের হোটেলে আছে,আপনি আপনার বাজেট আনুসারে সে সব হোটেলে বুকিং করতে পারেন।
কলশকাঠী জমিদার বাড়ি ঘুরতে আসলে ,হাতে আবশ্যই সময় নিয়ে আসবেন ,একসাথে বরিশাল জেলার শীর্ষ দর্শনীয় স্থানসমূহ ঘুরে যেতে পারেন।
বাংলাদেশের পাহাড়ি সৌন্দর্যের কথা বললেই যে কয়টি স্থানের নাম সবার আগে মনে পড়ে, তার মধ্যে…
ঢাকা শহরের মিরপুরে অবস্থিত প্রাণ-প্রকৃতির মিলনমেলা বাংলাদেশের জাতীয় চিড়িয়াখানা (Bangladesh National Zoo) , যা আমাদের…
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ভোলার স্বাধীনতা জাদুঘর(freedom museum bhola)। ভোলা…
ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় অবস্থিত একটি দৃষ্টিনন্দন পর্যটন আকর্ষণ জ্যাকব টাওয়ার(jakob tower), যা "বাংলার আইফেল…
বাংলাদেশের একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর দ্বীপ চর কুকরি মুকরি(chor kukri mukri)এলাকা, যা ভোলা জেলার দক্ষিণে…
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার নিমতলা গ্রামের পাশে অবস্থিত একটি মনোরম ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর…
View Comments