lalbagh fort
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পুরান ঢাকা এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত একটি অমূল্য ঐতিহাসিক নিদর্শন লালবাগ কেল্লা (Lalbagh Fort)। এটি মুঘল আমলের একটি অসমাপ্ত দুর্গ বা কেল্লা, যা এখনও তার সৌন্দর্য ও ইতিহাস নিয়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
১।নির্মাণ শুরু: ১৬৭৮ খ্রিষ্টাব্দে
২।নির্মাতা: মুঘল সুবেদার প্রিন্স মুহাম্মদ আজম (সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র)
৩।নির্মাণ অসম্পূর্ণ রয়ে যায় পরী বিবির মৃত্যুর কারণে।
৪।পরবর্তীতে সুবেদার শায়েস্তা খাঁ কেল্লার নির্মাণ তদারকি করেন। কিন্তু কন্যা পরী বিবির মৃত্যুতে তিনি এটি “অপশকুন” মনে করে কাজ বন্ধ করে দেন।
লালবাগ কেল্লা মুঘল স্থাপত্যের অনন্য উদাহরণ। পুরো কেল্লা কমপ্লেক্সটি একটি আয়তকার প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত, যার ভেতরে রয়েছে তিনটি মূল স্থাপনা:
১।পরী বিবির সমাধি
২।দেওয়ান-ই-আম (দরবার হল)
৩।ত্রি-গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ
এছাড়াও রয়েছে সুশোভিত বাগান, জলাধার ও একটি গোপন সুড়ঙ্গপথ।
পরী বিবি ছিলেন মুঘল সুবেদার শায়েস্তা খাঁ-এর কন্যা। ইতিহাসবিদদের মতে, তিনি ছিলেন খুবই সুন্দর, বুদ্ধিমতী এবং মেহমানপরায়ণ।পরী বিবির অকালমৃত্যু হয় মাত্র কিশোর বয়সে, এবং এই মৃত্যুই শায়েস্তা খাঁকে গভীরভাবে মর্মাহত করে তোলে। তিনি এই দুর্গকে “অপবিত্র” বা “অপশকুন” মনে করে লালবাগ কেল্লার নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। তাই আজও লালবাগ কেল্লা একটি অসমাপ্ত দুর্গ হিসেবে পরিচিত।
২।দেওয়ান-ই-আম:
প্রশাসনিক কার্য পরিচালনার কেন্দ্র।বর্তমানে এখানে একটি জাদুঘর স্থাপন করা হয়েছে যেখানে মুঘল আমলের নানা নিদর্শন প্রদর্শিত হয়।
৩।মসজিদ:
কেল্লার পশ্চিম পাশে অবস্থিত।তিনটি গম্বুজ বিশিষ্ট এবং চমৎকার কারুকাজে সাজানো।
৪।সুড়ঙ্গপথ:
কেল্লার নিচ দিয়ে গোপন একটি সুড়ঙ্গপথ রয়েছে বলে জনশ্রুতি।এটি এখন বন্ধ এবং পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত নয়।
৫।বাগান ও ফোয়ারা:
সুন্দরভাবে পরিকল্পিত মুঘল বাগান ও ফোয়ারা রয়েছে কেল্লার অভ্যন্তরে।ফুল, বৃক্ষ ও জলাধারের মেলবন্ধন এটি আরও মনোরম করে তুলেছে।
এটি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র।প্রতিদিন হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক এখানে ভ্রমণে আসেন।ঐতিহাসিক গুরুত্ব ছাড়াও এটি শিক্ষার্থী, গবেষক এবং ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য একটি আদর্শ স্থান।
এলাকা: লালবাগ, পুরান ঢাকা জেলা: ঢাকা কাছাকাছি স্থান: বুড়িগঙ্গা নদী, হোসেনি দালান, আরমানিটোলা
খোলা থাকে: সপ্তাহের সব দিন (সোমবার বিকাল পর্যন্ত বন্ধ) ।প্রবেশ মূল্য: বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য নামমাত্র ফি, বিদেশিদের জন্য আলাদা মূল্য।শিক্ষার্থীদের জন্য ছাড় রয়েছে।
ছবি তোলার জন্য আদর্শ স্থান।ইতিহাস ও স্থাপত্য ভালোবাসেন এমন ব্যক্তিদের জন্য অবশ্যই একবার দেখা দরকার।সকাল বা বিকালের সময় গেলে সূর্যের আলোয় ছবিগুলো আরও চমৎকার হবে।
আরও ভ্রমন গাইড পড়ুনঃঐতিহাসিক প্রাসাদ আহসান মঞ্জিল
বাংলাদেশের পাহাড়ি সৌন্দর্যের কথা বললেই যে কয়টি স্থানের নাম সবার আগে মনে পড়ে, তার মধ্যে…
ঢাকা শহরের মিরপুরে অবস্থিত প্রাণ-প্রকৃতির মিলনমেলা বাংলাদেশের জাতীয় চিড়িয়াখানা (Bangladesh National Zoo) , যা আমাদের…
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ভোলার স্বাধীনতা জাদুঘর(freedom museum bhola)। ভোলা…
ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় অবস্থিত একটি দৃষ্টিনন্দন পর্যটন আকর্ষণ জ্যাকব টাওয়ার(jakob tower), যা "বাংলার আইফেল…
বাংলাদেশের একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর দ্বীপ চর কুকরি মুকরি(chor kukri mukri)এলাকা, যা ভোলা জেলার দক্ষিণে…
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার নিমতলা গ্রামের পাশে অবস্থিত একটি মনোরম ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর…
View Comments