oxford mission church
বরিশালের একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ চার্চ অক্সফোর্ড মিশন চার্চOxford Mission Church। এটি বরিশাল শহরের অন্যতম প্রধান পর্যটন আকর্ষণগুলির একটি।এই চার্চটি ব্রিটিশ শাসনামলে স্থাপিত হয়েছিল। এটি শুধুমাত্র একটি খ্রিস্টান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, বরং একটি ঐতিহ্যবাহী ও সাংস্কৃতিক স্থাপনা যা দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির সাথে গভীরভাবে যুক্ত।এখনও এপিফানী গির্জা অক্সফোর্ড মিশন চার্চ একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে পরিচিত।
অক্সফোর্ড মিশন চার্চOxford Mission Church, যা মূলত “অক্সফোর্ড মিশন চার্চ অফ দি হলি ক্রস” নামে পরিচিত, বাংলাদেশের বরিশালে অবস্থিত এবং এটি ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যিক গুরুত্ব বহন করে। ১৯০৩ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং চার্চটি বাংলায় খ্রিস্টান মিশনারিদের কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল।অক্সফোর্ড মিশন চার্চটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯০৩ সালে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির কিছু শিক্ষার্থী দ্বারা, যারা ব্রিটেনে ‘সোসাইটি অফ দ্য হলি ক্রস’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাদের লক্ষ্য ছিল ভারতীয় উপমহাদেশে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার করা এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সহায়তা প্রদান।অক্সফোর্ড মিশন চার্চটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।: চার্চটি ইটালিয়ান রেনেসাঁর স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত, যা গথিক ও রোমানেস্ক স্থাপত্যের সংমিশ্রণ। বিশাল গম্বুজ, খোলা উঠোন এবং বেল টাওয়ার এটিকে বিশেষ আকর্ষণীয় করে তুলেছে। ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এটি ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থাপত্যের এক অনন্য উদাহরণ। অক্সফোর্ড মিশন চার্চের মিশনারিরা ধর্মীয় শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক উন্নয়নে কাজ করেছেন। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল স্থাপনে সহায়তা করেছে, যা এলাকার মানুষের জন্য বড় অবদান রাখে।চার্চটি বর্তমানে একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র এবং বরিশালের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি একটি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্য হিসেবে বাংলাদেশের জাতীয় ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
অক্সফোর্ড মিশন চার্চের স্থাপত্য শৈলী অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক ও মনোমুগ্ধকর। । এটি গথিক রিভাইভাল শৈলীতে নির্মিত হয়েছে, যা ইংরেজ স্থাপত্যের একটি বিশেষ শৈলী। চার্চটির উচ্চতা, প্রশস্ততা এবং ভিতরের সাজসজ্জা সব কিছুই এর স্থাপত্য শৈলীর প্রমাণ বহন করে। চার্চটির প্রধান অংশটি লাল ইট দিয়ে নির্মিত এবং এর বড় বড় জানালা ও দরজা গথিক স্থাপত্যের আদলে তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে এর উঁচু ছাদ ও অভ্যন্তরীণ কাঠামো দর্শকদের মুগ্ধ করে।
অক্সফোর্ড মিশন চার্চOxford Mission Church বরিশাল একটি সক্রিয় ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এখানে নিয়মিত প্রার্থনা ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাসনাস্থল। বিশেষ করে বড়দিন, ইস্টার এবং অন্যান্য খ্রিস্টান উৎসবগুলিতে এখানে বিশেষ প্রার্থনা ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অক্সফোর্ড মিশন চার্চের সাথে একটি মিশনারি স্কুলও সংযুক্ত, যা স্থানীয় শিশুদের জন্য শিক্ষার সুযোগ প্রদান করে। ব্রিটিশ মিশনারিরা শুধু ধর্ম প্রচারেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না, তারা শিক্ষার প্রসারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এই স্কুলটি এখনও সক্রিয় এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করে।
বরিশালের অক্সফোর্ড মিশন চার্চOxford Mission Church সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক দিক থেকে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে বিবেচিত। ১৯০৩ সালে ব্রিটিশ মিশনারিদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই গির্জাটি খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার, শিক্ষা, এবং মানবসেবার মাধ্যমে বরিশালে একটি শক্তিশালী প্রভাব বিস্তার করেছে। এটি শুধু ধর্মীয় কেন্দ্র নয়, বরং বরিশাল এবং এর আশেপাশের অঞ্চলে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং আধ্যাত্মিকতার প্রতীক হিসেবেও স্বীকৃত।চার্চটি একাধিক সামাজিক ও শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য পরিচিত। মিশনারিরা স্থানীয় জনগণের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেছেন, যা তৎকালীন সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই কাজগুলো বরিশালের বিভিন্ন সমাজের মানুষকে শিক্ষিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে এবং আজও স্থানীয় সংস্কৃতিতে এই চার্চের অবদান স্মরণীয়।চার্চটি ঔপনিবেশিক আমলের স্থাপত্যশৈলীর একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। গথিক এবং রেনেসাঁ স্থাপত্যশৈলীর সমন্বয়ে নির্মিত এই চার্চটি তার স্থাপত্যশৈলীর জন্য বিখ্যাত এবং এটি এক ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত। এটি বাংলাদেশে ব্রিটিশ উপনিবেশিক স্থাপত্যের একটি অন্যতম নমুনা, যা সময়ের সাথে সাথে বরিশালের পরিচিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
অক্সফোর্ড মিশন চার্চের চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বরিশাল শহরের অন্যতম আকর্ষণ। চার্চটি সবুজে ঘেরা একটি শান্ত ও নিরিবিলি পরিবেশে অবস্থিত, যা দর্শনার্থীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। চার্চের চারপাশে রয়েছে সুন্দর ফুলের বাগান, উঁচু গাছপালা, ও খোলা মাঠ। বিশাল গাছগুলো চারপাশে ছায়া দিয়ে রেখেছে, যা জায়গাটিকে শীতল এবং আরামদায়ক করে তোলে। বিশেষ করে বর্ষাকালে চারপাশের সবুজ প্রকৃতি এক নতুন রূপ ধারণ করে, যা মুগ্ধকর।চার্চের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে শান্ত জলাধার এবং পুকুর, যা জায়গাটির পরিবেশকে আরও মোহনীয় করে তুলেছে। প্রাকৃতিক এই সৌন্দর্য এবং শান্তিময় পরিবেশ শুধু আধ্যাত্মিকতার জন্যই নয় বরং মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের জন্যও এখানে দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।
বরিশালের অক্সফোর্ড মিশন চার্চ বর্তমানে একটি ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই গির্জাটি এখনও তার আদি স্থাপত্য রীতি ও পরিবেশকে ধরে রেখেছে এবং বরিশালের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাসনালয়। চার্চটি চার্চ অব বাংলাদেশের অধীনে পরিচালিত হয় এবং বরিশাল ধর্মপ্রদেশের প্রধান গির্জা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।গির্জার চারপাশে একটি স্নিগ্ধ, সবুজ পরিবেশ আছে যা দর্শনার্থীদের প্রশান্তি এনে দেয়। প্রতি সপ্তাহে এবং বিশেষ ধর্মীয় উৎসবগুলিতে এখানে প্রার্থনা ও বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হয়। এটি প্রতিদিন দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে, যারা এখানকার আদি স্থাপত্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন।গির্জার চারপাশে একটি স্নিগ্ধ, সবুজ পরিবেশ আছে যা দর্শনার্থীদের প্রশান্তি এনে দেয়। প্রতি সপ্তাহে এবং বিশেষ ধর্মীয় উৎসবগুলিতে এখানে প্রার্থনা ও বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হয়। এটি প্রতিদিন দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে, যারা এখানকার আদি স্থাপত্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন।
ঢাকা থেকে অক্সফোর্ড মিশন চার্চে , বরিশালে যাতায়াতের জন্য কয়েকটি প্রধান পথ রয়েছে। আপনি বাস, লঞ্চ বা বিমান ব্যবহার করে যাতায়াত করতে পারেন।
১।ঢাকা থেকে সরাসরি বরিশাল পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বাস সার্ভিস রয়েছে। আপনি গাবতলী, সায়েদাবাদ বা মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে বাস ধরতে পারেন। নন এসি এবং এসি বাস সার্ভিস রয়েছে সবসময়।সাধারণত ৫-৬ ঘণ্টা সময় লাগে সাকুরা, বিআরটিসি,হানিফ,এনা,গ্রীন লাইন, ইত্যাদি।
২।সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন লঞ্চ বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। জনপ্রিয় লঞ্চ সার্ভিসগুলির মধ্যে রয়েছে সুন্দরবন, পারাবত, এম ভি প্রিন্স আওলাদ,এডভেঞ্চার ,মানামি,সুরভী ইত্যাদি।
৩।ঢাকা থেকে বরিশাল বিমানবন্দরে সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে। ফ্লাইটের সময় প্রায় ৪৫-৬০ মিনিট।
বরিশাল শহরে পৌঁছানোর পর, স্থানীয় পরিবহন যেমন রিকশা, অটোরিকশা বা সিএনজি ব্যবহার করে যেতে পারেন। যা সহজেই যাওয়া যায়।
এই উপায়গুলির মধ্যে আপনার সুবিধা এবং বাজেট অনুযায়ী যে কোনো একটি বেছে নিয়ে ঢাকা থেকে বরিশালে অক্সফোর্ড মিশন চার্চে যেতে পারেন।
বরিশাল সদরে থাকার জন্য অনেক আবাসিক হোটেল রয়েছে। আপনি আপনার বাজেট অনুসারে যেকোনো আবাসিক হোটেলে থাকতে পারেন।এদের মধ্যে হোটেল গ্র্যান্ড পার্ক(০১৭৭৭-৭৩৫১৭২), হোটেল এথেনা ইন্টারন্যাশনাল(০১৭১২-২৬১৬৩৩),হোটেল আলি ইন্টারন্যাশনাল,হোটেল সেডোনা উল্লেখযোগ্য।
১।জাফরান রেস্টুরেন্ট – বারিশালের অন্যতম জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট, যা চাইনিজ এবং ইন্ডিয়ান খাবারের জন্য প্রসিদ্ধ।
২।তাওয়া রেস্টুরেন্ট – স্থানীয় খাবার যেমন মাছ, ভর্তা, ও ভাতের জন্য বিখ্যাত।
৩।হান্ডি করাই – মাটন ডিশের জন্য বিশেষভাবে সুপরিচিত।
৪।ধানসিড়ি রেস্টুরা – স্থানীয় খাবারের একটি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট।
বরিশাল সদরে ভালমানের রসগোল্লা পাওয়া যায়।আবশ্যই নিতাই ও হকের রসগোল্লা খাবেন।
বরিশালের অক্সফোর্ড মিশন চার্চ ঘুরতে আসলে, বরিশালের ঐতিহাসিকর লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি একবারের জন্য হলেও ঘুরে যাবেন।
বাংলাদেশের পাহাড়ি সৌন্দর্যের কথা বললেই যে কয়টি স্থানের নাম সবার আগে মনে পড়ে, তার মধ্যে…
ঢাকা শহরের মিরপুরে অবস্থিত প্রাণ-প্রকৃতির মিলনমেলা বাংলাদেশের জাতীয় চিড়িয়াখানা (Bangladesh National Zoo) , যা আমাদের…
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ভোলার স্বাধীনতা জাদুঘর(freedom museum bhola)। ভোলা…
ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় অবস্থিত একটি দৃষ্টিনন্দন পর্যটন আকর্ষণ জ্যাকব টাওয়ার(jakob tower), যা "বাংলার আইফেল…
বাংলাদেশের একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর দ্বীপ চর কুকরি মুকরি(chor kukri mukri)এলাকা, যা ভোলা জেলার দক্ষিণে…
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার নিমতলা গ্রামের পাশে অবস্থিত একটি মনোরম ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর…
View Comments