বরিশাল জেলার শীর্ষ দর্শনীয় স্থানসমূহ
top attractions in barisal district
বরিশাল বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যসমৃদ্ধ জেলা। এখানে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। বরিশাল জেলার শীর্ষ দর্শনীয় স্থানসমূহ সম্পর্কে নিচে দেওয়া হল:
১।বেলস পার্ক
বরিশালের বেলস পার্ক একটি জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র যা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এর অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং নান্দনিক সাজসজ্জা স্থানীয় ও পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত এই পার্কটি মূলত ব্রিটিশ সরকারি কর্মকর্তা বেল সাহেবের নামে নামকরণ করা হয়। বেলস পার্কটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সবুজ গাছপালা এবং উন্মুক্ত স্থানের জন্য বিশেষভাবে জনপ্রিয়।বরিশালের বেলস পার্ক স্থানীয়দের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয়, কারণ এখানে তারা সময় কাটাতে আসে, পরিবার ও বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয় এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করে।বিস্তারিত
২। দুর্গাসাগর দিঘী
দুর্গাসাগর দিঘী বরিশালের একটি ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর দিঘী। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ দিঘী হিসেবে পরিচিত এবং বরিশালের সদর উপজেলার মাধবপাশা গ্রামে অবস্থিত। দিঘীটির খনন করা হয়েছিল ১৭৮০ সালে, বরিশালের জমিদার রাজা শিব নারায়ণ তাদের মা দুর্গামতির স্মৃতির উদ্দেশ্যে এটি খনন করেন। এই দিঘীটির নামও তাই “দুর্গাসাগর”। দিঘিটির পাশে বড় সবুজ গাছপালা এবং প্রচুর পাখি দেখতে পাওয়া যায়, যা প্রকৃতিপ্রেমীদের আকর্ষণ করে।বিস্তারিত
৩. গুঠিয়া মসজিদ
বরিশালের গুঠিয়া মসজিদ, যার পূর্ণ নাম হচ্ছে “বায়তুল আমান জামে মসজিদ ও ঈদগাহ কমপ্লেক্স,” বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর মসজিদগুলোর একটি। এটি বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া গ্রামে অবস্থিত।গুঠিয়া মসজিদটি তার আধুনিক নির্মাণশৈলী, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং মনোমুগ্ধকর স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত। মসজিদ কমপ্লেক্সটি প্রায় ১৪ একর জমির ওপর বিস্তৃত এবং এখানে একটি বড় পুকুর, উদ্যান এবং ঈদগাহ মাঠ রয়েছে। মসজিদটির মূল ভবনে মোজাইক, মার্বেল এবং অত্যন্ত সুন্দর নকশা করা হয়েছে যা দেখে দর্শনার্থীরা মুগ্ধ হয়। বিস্তারিত
৪।লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি
লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি বরিশালের একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা যা বরিশাল শহরের অদূরে অবস্থিত। এই জমিদার বাড়িটি ১৭ শতকে রামচন্দ্র রায় চৌধুরী নামক এক জমিদার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। লাকুটিয়া জমিদার বাড়িটি তার স্থাপত্যশৈলী, ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং পুরনো দিনের স্মৃতি বহন করার কারণে পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিত। বিস্তারিত
৫।অক্সফোর্ড মিশন চার্চ
বরিশালের একটি ঐতিহাসিক ও বিখ্যাত স্থাপত্য নিদর্শন। এটি মূলত খ্রিস্টধর্ম প্রচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।অক্সফোর্ড মিশন চার্চের স্থাপত্যশৈলী ব্রিটিশ-গথিক স্টাইলে নির্মিত, যা ঐ সময়ের ইউরোপীয় স্থাপত্যের অনুপ্রেরণায় গড়ে উঠেছে। চার্চটির ছাদ অনেক উঁচু এবং গম্বুজ আকৃতির, যা একে খুবই দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে। চার্চের ভিতরে কাঠের খোদাই করা আসবাবপত্র, উঁচু মণ্ডপ, বিশাল জানালা এবং গির্জার ঘণ্টা রয়েছে, যা প্রার্থনা এবং ধর্মীয় কার্যক্রমের সময় এক অনন্য পরিবেশ সৃষ্টি করার কারণে পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিত।বিস্তারিত
৬।সাতলার বিল
সাতলার বিল বরিশালের একটি অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা জলাভূমি, যা বিশেষভাবে “শাপলার বিল” নামেও পরিচিত। এটি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা গ্রামে অবস্থিত এবং বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর শাপলার বিল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। সাতলার বিলের মূল আকর্ষণ হলো শাপলার অপার সৌন্দর্য। ভোরের প্রথম আলোয় বিলে ফুটে থাকা শাপলাগুলো পর্যটকদের মনকে মুগ্ধ করে তোলে। প্রায় ১০০ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই বিলে নৌকা ভ্রমণের মাধ্যমে পর্যটকরা বিলের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।বিস্তারিত
৭।ভাসমান পেয়ারা বাগান
বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের স্বরূপকাঠি (নেছারাবাদ) উপজেলায় অবস্থিত, যা দেশের একমাত্র ভাসমান বাগান হিসেবে বিখ্যাত। এই পেয়ারা বাগানটি নৌকার মাধ্যমে পরিচালিত হয় এবং বর্ষা মৌসুমে এখানে ভাসমান হাট বসে, যা পর্যটকদের জন্য একটি অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠেএই ভাসমান বাজারে ছোট ছোট নৌকা নিয়ে কৃষকরা পেয়ারা বিক্রি করেন, যা পর্যটকদের জন্য ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা প্রদান করে।।বিস্তারিত
৮।কলশকাঠী জমিদার বাড়ি
১০।শেরে বাংলা স্মৃতি জাদুঘর
শেরে বাংলা স্মৃতি জাদুঘর (Sher-e-Bangla Memorial Museum) বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক জাদুঘর, যা শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের জীবন ও কর্মের স্মৃতিচিহ্ন ধারণ করে।জাদুঘরটি মূলত শেরে বাংলার জীবন ও কর্মকে উপজীব্য করে গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে তার ব্যক্তিগত জীবন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং দেশের জন্য তার অবদানের নানান দিক তুলে ধরা হয়েছে। এখানে শেরে বাংলার ব্যবহৃত বিভিন্ন ঐতিহাসিক নথি, বই, ছবির সংগ্রহ এবং ব্যক্তিগত জিনিসপত্র সংরক্ষিত রয়েছে।জাদুঘরটি বরিশাল শহরের একটি সুন্দর ও নৈসর্গিক পরিবেশে অবস্থিত, যেখানে দর্শনার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে ইতিহাসের নিদর্শনগুলো উপভোগ করতে পারেন। বিস্তারিত
ঢাকা থেকে বারিশাল যাওয়ার উপায়
লঞ্চঃঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও রোমাঞ্চকর উপায় হলো লঞ্চ বা স্টিমার। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন লঞ্চ ছাড়ে। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত লঞ্চগুলি ছাড়ে, এবং সকালে বরিশালে পৌঁছায়।সময়: প্রায় ৮-১০ ঘণ্টা।ভাড়া: সিটের ধরন অনুযায়ী ভাড়া পরিবর্তিত হয় (ডেক, কেবিন, এসি কেবিন)।
বাস:ঢাকা থেকে বরিশালে সরাসরি এসি ও নন-এসি বাস সার্ভিস রয়েছে। গাবতলী, সায়েদাবাদ এবং মহাখালী থেকে বাসগুলি ছাড়ে।সময়: প্রায় ৫-৬ ঘণ্টা।ভাড়া: এসি ও নন-এসি বাসের জন্য ভাড়া ৫০০-১০০০ টাকা (ভেদাভেদ থাকতে পারে)।
বিমান:যদি দ্রুত বরিশাল পৌঁছাতে চান, তবে বিমান একটি ভালো বিকল্প। ঢাকা থেকে প্রতিদিন বরিশালের উদ্দেশ্যে ফ্লাইট রয়েছে।সময়: প্রায় ৩০-৪০ মিনিট।ভাড়া: ফ্লাইটের ভাড়া সময় ও সিটের ধরন অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।
বরিশালে ঘুরতে আসলে কোথায় থাকবেনঃ
বরিশাল সদরে থাকার জন্য অনেক আবাসিক হোটেল রয়েছে। আপনি আপনার বাজেট অনুসারে যেকোনো আবাসিক হোটেলে থাকতে পারেন।এদের মধ্যে হোটেল গ্র্যান্ড পার্ক(০১৭৭৭-৭৩৫১৭২), হোটেল এথেনা ইন্টারন্যাশনাল(০১৭১২-২৬১৬৩৩),হোটেল আলি ইন্টারন্যাশনাল,হোটেল সেডোনা উল্লেখযোগ্য।
বরিশালে ঘুরতে আসলে কোথায় খাবেনঃ
১।জাফরান রেস্টুরেন্ট – বারিশালের অন্যতম জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট, যা চাইনিজ এবং ইন্ডিয়ান খাবারের জন্য প্রসিদ্ধ।
২।তাওয়া রেস্টুরেন্ট – স্থানীয় খাবার যেমন মাছ, ভর্তা, ও ভাতের জন্য বিখ্যাত।
৩।হান্ডি করাই – মাটন ডিশের জন্য বিশেষভাবে সুপরিচিত।
৪।ধানসিড়ি রেস্টুরা – স্থানীয় খাবারের একটি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট।
বরিশাল সদরে ভালমানের রসগোল্লা পাওয়া যায়।আবশ্যই নিতাই ও হকের রসগোল্লা খাবেন।
[…] কুয়াকাটার প্রধান দর্শনীয় স্থানগুলো […]