বরিশাল বিভাগ

ভিমরুলি পেয়ারা বাগান ও ভাসমান পেয়ারা বাজার

ভিমরুলি পেয়ারা বাগান ও ভাসমান পেয়ারা বাজার

vasoman peyara bazar

ভিমরুলি পেয়ারা বাগান ও ভাসমান পেয়ারা বাজার( Floating Guava Market) বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত একটি বিশেষ ধরনের কৃষি প্রকল্প। এই ভাসমান বাজার নৌকার মাধ্যমে বরিশালের ঝালকাঠি, স্বরূপকাঠি, এবং পিরোজপুর এলাকার  নদী এবং খালের উপরে তৈরি করা হয়। বরিশালের এই ভাসমান পেয়ারা বাগান শুধু পেয়ারা চাষের জন্যই নয়, বরং এর সাথে সংযুক্ত ভাসমান বাজারের জন্যও প্রসিদ্ধ। এখানে কৃষকরা নৌকায় করে তাদের সংগ্রহ করা পেয়ারা সরাসরি নদীতে ভাসমান বাজারে নিয়ে যান এবং সেখানে বিক্রি করেন। এভাবে, এখানকার ভাসমান বাজার পর্যটকদের জন্যও বিশেষ আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে।

vasoman peyara bazar

ভাসমান পেয়ারা বাগানের বিশেষত্ব:

এখানকার পেয়ারা চাষিরা তাদের পেয়ারা গাছগুলিকে নদীর উপরে ভাসমান কাঠামোতে স্থাপন করে থাকেন। এই কাঠামোগুলি সাধারণত বাঁশ এবং বেত দিয়ে তৈরি করা হয়, যা পানির উপরে স্থাপন করা হয়। এভাবে বাগানের জন্য আলাদা করে জমির প্রয়োজন হয় না, বরং নদীর পানিই কৃষির প্রধান উপাদান হিসেবে কাজ করে। বরিশাল বিভাগ সুপারি, আমড়া, এবং পেয়ারা উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত।

vasoman peyara bazar

ভাসমান পেয়ারা বাজারে কখন যাবেন:

বর্ষার মৌসুমে, বিশেষ করে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত, এই এলাকার পেয়ারা বাগান এবং ভাসমান বাজার পর্যটকদের আকর্ষণ করে। পর্যটকরা নৌকায় চেপে বাগানের মধ্য দিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন এবং সরাসরি পেয়ারা ক্রয় করতে পারেন। সকাল ১১ টার পর পেয়ারা বাজারের ভীড় কমতে থাকে,তাই ১১ টার আগে আসা ভাল।

ভাসমান পেয়ারা  বাজারের কোথায় খাবেনঃ

ভিমরুলি ঘুরে চলে যান কুড়িয়ানা বাজারে ।সেখানে সকাল -সন্ধ্যা হোটেল নামে একটা দোকান আছে(স্থানীয়ভাবে বৌদির হোটেলের  পরিচিত)। এর রন্নার খুবই ভালো।  বৌদির হোটেলে তাজা মাছ ভাজা পাওয়া যায় । বাজার সংলগ্ন দোকানের গরম গরম রসগোল্লার স্বাদ আর বৌদির হোটেলের খাবার মনে জাগাবে তৃপ্তির স্বাদ।

এছাড়া   বরিশাল সদর এলাকায় কিছু জনপ্রিয় ও মানসম্মত খাবার রেস্টুরেন্টের নামঃ

যেমনঃ

১।লেক ভিউ রেস্টুরেন্টঃচৌমাথা বাজারের কাছে, লেকের পাশে অবস্থিত। বিদেশি খাবারের জন্য পরিচিত।

২।ভাই ভাই হোটেলঃচৌমাথা লেকের উত্তরে অবস্থিত, যেখানে দুপুরের খাবার জনপ্রিয়। এখানে দেশি খাবারের স্বাদ বেশ ভালো।

৩।খাবার বাড়ি রেস্টুরেন্টঃবরিশালে বিভিন্ন ধরনের খাবার উপভোগের জন্য একটি ভালো স্থান।

৪।মায়ের দোয়া রেস্টুরেন্টঃএকই এলাকায় অবস্থিত, দেশীয় খাবারের জন্য ভালো বিকল্প।

এছাড়া সি অ্যান্ড বি রোড এলাকায়ও বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি খাবারের রেস্টুরেন্ট রয়েছে, যেখানে মানসম্মত খাবার পাওয়া যায়

vasoman peyara bazar

থাকার ব্যবস্থাঃ

ঝালকাঠি শহরে থাকার জন্য ধানসিড়ি রেস্ট হাউজ,হালিমা এবং আরাফাত বোর্ডিং -এ ১০০ থেকে ২৫০ টাকা ভাড়ায় থাকা যাবে।তবে ভালো মানের হোটেলে থাকার জন্য বরিশাল শহরে আসতে হবে।বরিশাল শহরে বিভিন্ন মানের বেশকিছু হোটেল আছে।

বরিশাল সদরে বেশ কিছু উন্নতমানের হোটেল রয়েছে যেখানে থাকা, খাবার এবং অন্যান্য সুবিধা উপলব্ধ। এখানে কিছু জনপ্রিয় হোটেলের তালিকা:

১।Hotel Grand Park-বেলস পার্ক লেকের পাশে অবস্থিত, এটি আন্তর্জাতিক মানের সুবিধাসম্পন্ন হোটেল। এখানে পার্ক ভিউ সহ বিভিন্ন ধরনের রুম ও সুইট রয়েছে।

২।Hotel Sedona-সদর রোডে অবস্থিত এই হোটেলটি চাইনিজ এবং বাংলাদেশি খাবারের পাশাপাশি ২৩২০ বর্গফুটের কনফারেন্স রুমের সুবিধা দেয়।

৩।Rich Mart Rest House-লঞ্চ ঘাটের কাছে অবস্থিত এই রেস্ট হাউসে আধুনিক সুবিধাসহ সিঙ্গেল থেকে ফ্যামিলি স্যুট পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের রুম পাওয়া যায়।

৪।Hotel Arena-সদর রোডে অবস্থিত হোটেল এ রান্নাঘরের সুবিধাসহ আধুনিক সজ্জা ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুম রয়েছে, যা আরামদায়ক পরিবেশে থাকার জন্য উপযোগী।

৫।Hotel Athena Internationa-কাটপট্টি রোডে অবস্থিত এই হোটেলে ফ্রি সকালের নাস্তা, ওয়াই-ফাই, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধা প্রদান করে।

৬।Hotel Charu Residential-বান্দ রোডে অবস্থিত এই হোটেলটি কক্ষের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ এবং বিনামূল্যে সকালের নাস্তার সুবিধা প্রদান করে।

আরও তথ্যের জন্য প্রতিটি হোটেলের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন বা তাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন

ভাসমান পেয়ারা বাজার কিভাবে যাবেনঃ

ঢাকা থেকে বরিশালের ভাসমান পেয়ারা বাগানে যেতে হলে আপনাকে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। এখানে পর্যায়ক্রমে একটি নির্দেশনা দেওয়া হলো:

ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার উপায়ঃ

ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার কয়েকটি প্রধান উপায় রয়েছে, যা যাত্রার সময় এবং যাতায়াতের মাধ্যমের উপর নির্ভর করে। এখানে প্রতিটি বিকল্পের বিবরণ দেওয়া হলো:

১। লঞ্চ/স্টিমারঃঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার অন্যতম জনপ্রিয় ও আরামদায়ক মাধ্যম হলো লঞ্চ বা স্টিমার। বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল লঞ্চ এবং স্টিমার আছে যেগুলো সদরঘাট থেকে বরিশাল পর্যন্ত চলে। লঞ্চ যাত্রায় সময় লাগে প্রায় ৭-৯ ঘণ্টা এবং সন্ধ্যা থেকে শুরু করে সারারাতের যাত্রা হয়। উল্লেখযোগ্য লঞ্চের মধ্যে রয়েছে:এস এস পারিজাত ,এম ভি মানামি ,এম ভি সুন্দরবন-১০

২।বাসঃঢাকা থেকে বরিশাল পর্যন্ত বিভিন্ন পরিবহন সংস্থার বাস চলাচল করে। গ্রীনলাইন, সাকুরা, সোয়াদ ইত্যাদি পরিবহন সংস্থার এসি এবং নন-এসি বাস সার্ভিস রয়েছে। বাসে ঢাকা থেকে বরিশাল পৌঁছাতে সময় লাগে ৫-৬ ঘণ্টা।

৩। বিমানঃঢাকা থেকে বরিশাল বিমানযাত্রার জন্য একটি দ্রুত মাধ্যম। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস এবং নভোএয়ারের ফ্লাইট আছে। ফ্লাইটে সময় লাগে মাত্র ৩০-৪০ মিনিট।

বরিশাল থেকে স্বরূপকাঠি (নেছারাবাদ):

বরিশাল থেকে স্বরূপকাঠি (নেছারাবাদ) যাওয়ার জন্য আপনি বাস বা মাইক্রোবাস নিতে পারেন। এটি প্রায় ২ ঘণ্টার পথ।

স্বরূপকাঠি থেকে ভাসমান পেয়ারা বাগান:

স্বরূপকাঠি বাজার থেকে স্থানীয় নৌকা বা ট্রলার ভাড়া করে ভাসমান পেয়ারা বাগানে যেতে হবে। ভ্রমণের সময় প্রায় ৩০-৪৫ মিনিট।

এই যাত্রাপদ্ধতিগুলির মধ্যে আপনার সুবিধা ও পছন্দ অনুযায়ী যে কোনোটি বেছে নিতে পারেন।ভবিষ্যতে আরো

বরিশাল ভাসমান পেয়ারা বাগান ঘুরতে আসলে ,  লাল শাপলার রাজ্য সাতলা,বরিশাল।Satla Beel একবারের জন্য হলেও ঘুরে যাবেন।

Admin sara

View Comments

Recent Posts

প্রাণ-প্রকৃতির মিলনমেলা বাংলাদেশের জাতীয় চিড়িয়াখানা

bangladesh national zoo প্রাণ-প্রকৃতির মিলনমেলা বাংলাদেশের জাতীয় চিড়িয়াখানা ঢাকা শহরের মিরপুরে অবস্থিত প্রাণ-প্রকৃতির  মিলনমেলা বাংলাদেশের…

55 years ago

ঐতিহ্য সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ভোলার স্বাধীনতা জাদুঘর

freedom museum bhola ঐতিহ্য সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ভোলার স্বাধীনতা জাদুঘর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও…

55 years ago

দৃষ্টিনন্দন পর্যটন আকর্ষণ জ্যাকব টাওয়ার

​ jakob tower দৃষ্টিনন্দন পর্যটন আকর্ষণ জ্যাকব টাওয়ার ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় অবস্থিত একটি দৃষ্টিনন্দন…

55 years ago

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর দ্বীপ চর কুকরি মুকরি

chor kukri mukri প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর দ্বীপ চর কুকরি মুকরি বাংলাদেশের একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর…

55 years ago

মনোরম ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আকিলপুর সমুদ্র সৈকত

akilpur sea beach মনোরম ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আকিলপুর সমুদ্র সৈকত ​বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড…

55 years ago

অনন্য প্রাকৃতিক গন্তব্য মাটি-টা ইকো রিসোর্ট

সবুজ পাহাড়, লেক এবং প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যে ঘেরা এই রিসোর্টে আপনি পাবেন প্রকৃতির সান্নিধ্যে নির্মল প্রশান্তি।…

55 years ago